ইতিপূর্বে আমি মনে করিতাম মহানবী (সাঃ)-এর ঘোষিত মালহামা (মহাযুদ্ধ / আরমাগেডন / তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ) সংঘঠিত হইতে এখনও পাঁচ / দশ বছর বাকী আছে । কিন্তু সম্প্রতি ইরান সফরের সময় আমি দুইটি স্বপ্ন দেখিয়াছি (সেপ্টেম্বর / ২০১৪), একটার পর আরেকটা, যাহাতে আমি দেখিয়াছি পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হইয়া গিয়াছে এবং আকাশের দিকে পারমানবিক ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করা হইয়াছে । একই ঘটনা ঘটিয়াছিল নাইন ইলাভেনের পূর্বে যখন আমি নিউ ইয়র্কের লঙ আইল্যান্ডে বসবাস করিতাম । আমি স্বপ্নে দেখিয়াছিলাম নাইন ইলেভেন সংঘঠিত হইয়াছে, ম্যানহাটনের উচুঁ বিল্ডিংয়ে আগুন দেওয়া হইয়াছে এবং সেখান থেকে একটার পর একটা বিল্ডিংয়ে আগুন ছড়াইতে ছড়াইতে সারা পৃথিবীতে আগুনের শিখা ছড়াইয়া পড়িয়াছে । লং আইল্যান্ডের দার আল কোরআন মসজিদের জু’মুআর খোতবায় আমি আমার স্বপ্নের বিষয়টি উল্লেখ করিয়াছিলাম । আমার এই স্বপ্ন দেখিবার দুই বছর পরে নাইন ইলাভেন সংঘঠিত হয় । মহানবী (সাঃ) বলিয়াছেন যে, আখেরী জমানায় ঈমানদারদের স্বপ্ন কদাচিৎ মিথ্যা প্রমাণিত হইবে । আমার স্বপ্নের ব্যাখ্যা সম্ভবত এই যে, আমাদের হাতে মাত্র অল্প সময় বাকী আছে, সম্ভবত এক হইতে দুই বছর, যখন মহাযুদ্ধ শুরু হইবে, যাহাতে বড় বড় শহরগুলির অধিকাংশ মানুষ নিহত হইবে (বিশেষত উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপ মহাদেশের) । পক্ষান্তরে যেসব শহরের মানুষ এটম বোমার আঘাত হইতে বাঁচিয়া যাইবে, তাহারাও অরাজকতা, গৃহযুদ্ধ, মহামারী এবং অনাহারে কুকুর-বিড়ালের মতো ঝাঁকে ঝাঁকে মৃত্যুবরণ করিবে । মালহামার পরে বড় বড় শহরগুলিতে জাহান্নামের সকল দরজা খুলিয়া দেওয়া হইবে । কেননা এসব মেগাসিটিতে কোটি কোটি মানুষ বসবাস করে অথচ এদের খাবার-পানি আসে গ্রাম থেকে । যুদ্ধের পরে যেহেতু খাবার-পানি সরবরাহ ব্যবস্থা অচল হইয়া পড়িবে, তখন শহরবাসীগণ জীবন বাঁচাতে ছিনতাই-ডাকাতি-লুটতরাজ শুরু করিবে । তাহারা সভ্যতা-ভদ্রতা কিংবা জাহান্নামের শাস্তির কথা বেমালুম ভুলিয়া যাইবে । কুকুর কুকুরকে খায় বলিয়া একটি কথা প্রচলিত আছে, তখনকার মেগাসিটিতে বসবাসকারীদের অবস্থা হইবে অনেকটা এই রকম । শহরবাসীদের কেউ যদি জানিতে পারে যে, আপনার গৃহে একটু খাবার বা পানি আছে, তবে হাজার হাজার লোক ঝাপাইয়া পড়িবে এবং দরজা ভাঙিয়া তাহা ছিনাইয়া নিবে । এই ব্যাপারে আপনারা পবিত্র কোরআনের সুরা ইসরার এই আয়াতটি পাঠ করিয়া দেখিতে পারেন, “এমন কোন শহর নাই, যাহাকে আমরা (অবাধ্যতার কারণে) কেয়ামত দিবসের পূর্বে ধ্বংস করিব না অথবা যাহাকে কঠোর শাস্তি দিব না। ইহা তো কিতাবে লিপিবদ্ধ হইয়া গিয়াছে (১৭:৫৮)” । খ্রীষ্টান ধর্মজাযকগণ বলেন (আকাশে ছড়ানো ব্যাঙের ছাতার মতো এটম বোমার ধোয়ার কারণে পৃথিবীতে সূর্যের আলো আসিতে না পারিবার কারণে) পৃথিবী অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকিবে তিন দিন । পক্ষান্তরে মহানবী (সাঃ) বলিয়াছেন, চল্লিশ দিন (মানে অনেক দিন) পৃথিবী অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকিবে । এই সময় পৃথিবীর তাপমাত্রা নামিয়া যাইবে হিমাঙ্কের নীচে এবং শীতে মারা যাইবে কোটি কোটি মানুষ । আমি আমার স্বপ্নের কথা সাধারণত প্রকাশ করি না কিন্তু এই স্বপ্নটি আপনাদের কল্যাণে আসিবে ধারনা করিয়া প্রকাশ করিলাম । ইহার ফলে আমি যেমন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মহাদুর্যোগ মোকাবেলার ব্যাপারে নিজেকে প্রস্তুত করিতে যথেষ্ট সময় পাইতেছি, আপনারাও তাহা করিবার সুযোগ পাবেন । নবী করীম (সাঃ)-এর ভবিষ্যৎবাণীকৃত মালহামা (মহাযুদ্ধ) এমন ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হইবে যে, তাহার তুলনায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে মনে হবে চীনাবাদামের মতো ছোট । শেষ নবীর (সাঃ) আরেকটি ভবিষ্যতবাণী হইল, মালহামার পরে একটি পাখিও যদি আকাশে উড়ে তাহা ভূপাতিত হইবে । ইহাতে আমরা ধরিয়া নিতে পারি যে, মালহামার (তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের) পরে পৃথিবীতে মিসাইল, জঙ্গী বিমান, সেটেলাইট ইত্যাদি উড়ন্ত কিছুর অস্তিত্ব থাকিবে না । তারপর থেকে যুদ্ধ হইবে স্থলপথে এবং জলপথে ঘোড়া এবং নৌকা দিয়ে । আজ থেকে দশ বিশ বছর পরে যখন মালহামা (মহাযুদ্ধ) শেষ হইবে, পৃথিবীর এখনকার মানুষদের মাত্র ক্ষুদ্র একটি ভগ্নাংশ তখন বাঁচিয়া থাকিবে । আমার মনে হয় এখন পৃথিবীর জনসংখ্যা যদি আটশ কোটি হয়, মালহামার পরে পৃথিবীর জনসংখ্যা হইবে পঞ্চাশ কোটি । আপনি যদি মুসলিম হন অথবা মুসলমানদের বন্ধু হন (যেমন খ্রীষ্টানরা), তবে যত দ্রুত সম্ভব শহর থেকে দূরবর্তী কোন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে চলিয়া যান, যেখানে আপনার স্ত্রী এবং সন্তানদের জন্য খাবার-পানির ব্যবস্থা আছে ।
মূল - শায়খ ইমরান নজর হোসেন
অনুবাদ – বশীর মাহমুদ ইলিয়াস
মূল - শায়খ ইমরান নজর হোসেন
অনুবাদ – বশীর মাহমুদ ইলিয়াস